BOU SSC 2 Year Humanities 7 Assignment Answer 2021 উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি এসাইনমেন্ট

BOU SSC 2 Year Humanities 7 Assignment Answer 2021 উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি এসাইনমেন্ট 2021 উন্মুক্ত দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক শাখার ৭ম এসাইনমেন্ট।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমি:

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে AllResultNotice এর ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। আমদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন YouTube Channel

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:

পাকিস্তানে পূর্ব বাংলা বরাবরই ভয়াবহ রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। পাকিস্তানের প্রথম গণপরিষদের পূর্ব বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা স্বত্বেও গভর্ণর জেনারেল ও প্রধানমন্ত্রী উভয় পদেই নিয়োগ করা হয় পশ্চিম পাকিস্তান হতে । ১৯৪৭-৫৮ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ৪ জন রাষ্ট্রপ্রধানের মাত্র ১ জন ছিলেন পূর্ব বাংলার এবং তিনি ছিলেন উর্দুভাষী। পরে আইযুব খান রাজধানী ইসলামাবাদে স্থানান্তর করেন । পশ্চিম পাকিস্তানীরাই ছিল প্রকৃত অর্থে শাসন ক্ষমতায় ।

সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট

পাকিস্তান সৃষ্টির আন্দোলনে পূর্ব বাংলার জনগণ মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে। কিন্ত স্বাধীন রাষ্ট্রটিতে শুরু থেকেই বাঙ্গালি জনগোষ্ঠী বৈষম্যের শিকার হয়েছে। সামাজিকভাবে পশ্চিম পাকিস্তানীরা বাঙ্গালিকে “খর্বাকার’, “অর্ধ-মুসলমান’, “হিন্দু- ঘেঁষা মুসলমান’ প্রভৃতি বলে অপমান ও হেয় করত। তারা নিজেদের তথাকথিত যোদ্ধা জাতি হিসাবে প্রচার করে বাঙ্গালিকে ভীতু” বলে অবজ্ঞা করত। পাকিস্তানের ৫৬ ভাগ মানুষ ছিল বাঙ্গালি অন্যদিকে উর্দু ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ছিলো মাত্র ৭ ভাগ। তবু বাংলাকে বাদ দিয়ে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার যড়্যন্ত্র করে পাকিস্তানী শাসক ঘোষ্ঠী।

অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট

সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংক সমূহের প্রধান কার্যালয় পশ্চিম পাকিস্তানে থাকায় অর্থ পাচার হত অবাধে । পশ্চিম পাকিস্তানে যেসব শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠে তার বেশির ভাগের অর্থ আসত পূর্ব পাকিস্তানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা থেকে। বৈদেশিক মুদ্রার তিন ভাগের দু’ভাগ অর্জিত হত পূর্ব পাকিস্তানের পাট থেকে । আর এই অর্থ ব্যয় করত পশ্চিম পাকিস্তান । বৈদেশিক ঋণের শতকরা ৯০. থেকে ৮৫ ভাগ ব্যয় করত পশ্চিম পাকিস্তান।

সামরিক প্রশাসনিক প্রেক্ষাপট:

১৯৬৫ সাল পর্যন্ত একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীতে বাঙ্গালিদের প্রতিনিধিতৃ ছিলো যথাক্রমে ৫%, ১০% ও ১৬% সকল বিভাগের সদয় দপ্তর ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। কেন্দ্রিয় সরকারের কর্মচারিদের মধ্যে ৮৪% ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি এবং ১৬% ছিল বাঙালি। বিদেশী মিশনগুলোতে ৮৫ ভাগ কর্মচারী ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের ৷

১৯৭০ এর নির্বাচনের গুরুতৃ:

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসে ১৯৭০ এর নির্বাচনের গুরুপ্ত অতুলনীয় । এর ফলে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী বিপাকে পড়ে যায়। শেখ মুজিবুর রহমান অর্থাৎ বাঙ্গালির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়। নিচে ১৯৭০ এর নির্বাচনের গুরুতৃ উল্লেখ্য করা হল।

(১) নির্বাচনের মধ্যদিয়ে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের জয় হয়েছে। কারণ আওয়ামী লীগের বিজয় ছিল বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের বিজয় ।

(২) জনগণ ছয়দফা প্রশ্নে আওয়ামী লীগকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে। নির্বাচনে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগের ছয় দফা থেকে সরে আসার পথ খোলা ছিল না।

(৩) এই নির্বাচনের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়, পাকিস্তান ভৌগোলিক কারণে কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেননা পাকিস্তানের কোন রাজনৈতিক দল বা নেতার পাকিস্তানের দু’অংশে গ্রহণযোগ্যতা ছিল না।

বাঙালি জনগোষ্ঠীকে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসন-শোষণ নিপীড়ন থেকে রক্ষা করতে নন্দিত জননেতা শেখ মুজিবুর রহমান এতিহাসিক ছয় দফা প্রস্তাব উ্থাপন করেন। পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরে ১৯৬৬ সালের ৫-৬ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিরোধী দলের এক কনভেনশনে শেখ মুজিবুর রহমান এ প্রস্তাব পেশ করেন । ছয় দফা প্রস্তাবকে বঙ্গবন্ধু “বাঙ্গালির মুক্তিসনদ’ হিসাবে আখ্যায়িত করেন।